গাজায় চলমান সংঘাতের অবসানে শান্তির পথে প্রথম পদক্ষেপ নিয়েছে ইসরায়েল ও হামাস। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, উভয় পক্ষ তার প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে স্বাক্ষর করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান, এই চুক্তির ফলে খুব শিগগিরই সব জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে এবং ইসরায়েল তাদের সেনা সদস্যদের নির্ধারিত একটি লাইনে সরিয়ে আনবে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই চুক্তিকে “ইসরায়েলের জন্য একটি মহান দিন” বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বৃহস্পতিবার তার সরকারের একটি বৈঠক ডেকে চুক্তির অনুমোদন প্রক্রিয়া শুরু করার ঘোষণা দিয়েছেন।
অন্যদিকে হামাসও গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এই শান্তি চুক্তির খবর ছড়িয়ে পড়ার পর গাজা ও ইসরায়েলে সাধারণ মানুষের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। গাজাবাসীকে রাস্তায় নেচে, শিস দিয়ে এবং ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি তুলে উদযাপন করতে দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, দেইর আল বালাহ শহরের আল-আকসা হাসপাতালের বাইরে পুরুষ ও নারীদের জড়ো হয়ে সঙ্গীতের তালে নাচতে ও হাততালি দিতে। আরেকটি ভিডিওতে গাজার অন্য এলাকায় তরুণদের একটি দলকে রাস্তায় নাচতে দেখা যায়।
এই শান্তি চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন নেতা। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস সব পক্ষকে চুক্তির শর্ত মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এই দুর্ভোগের অবসান হওয়া উচিত।” যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমার এক বিবৃতিতে বলেন, “এটি একটি গভীর স্বস্তিকর মুহূর্ত।” তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে গাজার জন্য এই চুক্তিকে গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজও এই চুক্তিকে শান্তির দিকে একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, “দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাত, জিম্মি সংকট এবং বেসামরিক প্রাণহানির পর এই চুক্তি আশার আলো।” তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি মিশর, কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতাকারী ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানান।
এই শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নের মাধ্যমে গাজা অঞ্চলে দীর্ঘদিনের সংঘাতের অবসান এবং মানবিক সংকট নিরসনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এখন বিশ্ববাসীর দৃষ্টি চুক্তির পরবর্তী ধাপ এবং তার বাস্তবায়নের দিকে।