হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে ট্রাম্পকে নোবেল পুরস্কার দেওয়ার আহ্বান

হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে ট্রাম্পকে নোবেল পুরস্কার দেওয়ার আহ্বান

হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঐতিহাসিক চুক্তির পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইসরায়েলের বিরোধী দলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) এই চুক্তির ঘোষণা দেন ট্রাম্প নিজেই, যার পরপরই ইসরায়েলি রাজনৈতিক মহলে প্রশংসার ঢল নামে।

ইয়ার লাপিদ বলেন, “বর্তমানে অন্য যে কেউর চেয়ে ট্রাম্প নোবেল পুরস্কার সবচেয়ে বেশি প্রাপ্য। তিনি ইসরায়েলিদের কৃতজ্ঞতা প্রাপ্য।” তিনি ট্রাম্পের আলোচনাকারী দল এবং ইসরায়েলি নেতৃত্বকে অভিনন্দন জানান, বিশেষভাবে জিম্মিদের পরিবারকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, “এই সিংহ ও সিংহীরা বিশ্বকে জিম্মিদের ব্যাপারে এক মুহূর্তের জন্যও ভুলতে দেয়নি।”

ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগও ট্রাম্পের প্রশংসা করে বলেন, “কোনো সন্দেহ নেই, এ যুদ্ধবিরতির জন্য ট্রাম্প নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রাপ্য।”

এই চুক্তির মাধ্যমে আগামী ছয় সপ্তাহে হামাস তাদের হাতে থাকা সব জিম্মিকে মুক্তি দেবে। এর বিনিময়ে ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ করবে, কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেবে এবং পর্যায়ক্রমে সেনা প্রত্যাহার করবে।

চুক্তির খবর ছড়িয়ে পড়ার পর গাজায় উচ্ছ্বাসের জোয়ার বইছে। কেউ খুশিতে কাঁদছেন, কেউ বাঁশি বাজাচ্ছেন, কেউ গান গাইছেন-নাচছেন, আবার কেউ ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি তুলছেন। গাজার বাসিন্দা ঘাদা বলেন, “হ্যাঁ, আমি কাঁদছি; কিন্তু এটা আনন্দের অশ্রু। মনে হচ্ছে, নতুন করে আবার আমাদের জন্ম হলো।”

তবে আনন্দের মাঝেও রয়েছে শোক ও শঙ্কা। ইমান আল কৌকা বলেন, “আজ আমাদের আনন্দের দিন, আবার দুঃখেরও দিন। আমরা শুধু আমাদের বন্ধু, স্বজন এবং বাড়িঘরই হারাইনি, আমরা আমাদের শহর হারিয়েছি।”

আহমেদ দাহমান জানান, ইসরায়েলি বাহিনীর বোমায় তিনি তার বাবাকে হারিয়েছেন, কিন্তু মরদেহ দাফন করতে পারেননি। “আমার বাবার লাশ ধ্বংসস্তূপের তলায় রেখে পালাতে বাধ্য হয়েছিলাম,” বলেন তিনি। “বাড়ি ফিরে আমার প্রথম কাজ হবে বাবার দেহাবশেষ খুঁজে বের করে তার দাফন সম্পন্ন করা।”

এই যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে কেন্দ্র করে গাজায় যেমন আশার আলো দেখা যাচ্ছে, তেমনি রয়েছে যুদ্ধ-পরবর্তী বাস্তবতার কঠিন চিত্র। তবে ফিলিস্তিনিদের আশা—এই চুক্তি হয়তো তাদের জীবনে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করবে।