যেভাবে সূচনা হয়েছিল গাজা যুদ্ধের, দুই বছর পরও শান্তি অধরা

যেভাবে সূচনা হয়েছিল গাজা যুদ্ধের, দুই বছর পরও শান্তি অধরা

আজ সাতই অক্টোবর। ২০২৩ সালের এই দিনে ইসরায়েলে হামাসের আকস্মিক ও ভয়াবহ হামলায় অন্তত ১২০০ জন নিহত হন এবং প্রায় ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই ঘটনার পরপরই ইসরায়েল গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে, যা পরিণত হয় এক দীর্ঘ ও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে। দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এই যুদ্ধের ক্ষত এখনও গভীর, এবং গাজা আজ ধ্বংসস্তূপে পরিণত।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর টানা অভিযানে গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬৭ হাজারেরও বেশি মানুষ। ধ্বংস হয়েছে আবাসন, হাসপাতাল, স্কুলসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো। মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষ। যুদ্ধের ভয়াবহতা ও দীর্ঘস্থায়ীত্ব আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

তবে এই বর্ষপূর্তির দিনে কিছুটা আশার সুরও শোনা যাচ্ছে। কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা শুরু হয়েছে গতকাল থেকে। যদিও আলোচনা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে, তবুও অনেকেই আশা করছেন, এই উদ্যোগ হয়তো গাজা যুদ্ধের অবসানের পথ খুলে দিতে পারে।

এদিকে সাতই অক্টোবর হামলার স্মরণে ইসরায়েলজুড়ে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে। হামলার স্থানটিতে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে ও মোমবাতি জ্বালিয়ে নিহতদের স্মরণ করছেন ইসরায়েলিরা। এই স্মরণ অনুষ্ঠান একদিকে যেমন শোকের বহিঃপ্রকাশ, তেমনি যুদ্ধের ভয়াবহতা ও মানবিক বিপর্যয়ের স্মারক হিসেবেও কাজ করছে।

অন্যদিকে গাজায় চলমান মানবিক সংকট ও যুদ্ধবিরতির দাবিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ দেখা যাচ্ছে। যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের নানা শহরে সাধারণ মানুষ, মানবাধিকারকর্মী ও শিক্ষার্থীরা গাজায় ত্রাণ প্রবেশের সুযোগ এবং যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন। তবে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার শিক্ষার্থীদের এ ধরনের বিক্ষোভে অংশ না নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তার ভাষায়, এমন আচরণ ‘অ-ব্রিটিশসুলভ’।

এই দুই বছরের যুদ্ধে শুধু প্রাণহানি নয়, ভেঙে পড়েছে মানুষের জীবন, সমাজ ও ভবিষ্যতের স্বপ্ন। আলোচনার মাধ্যমে যদি এই যুদ্ধের অবসান ঘটে, তবে তা হবে মানবতার জন্য এক বড় অর্জন। তবে সেই আশার বাস্তবায়ন এখনও অনিশ্চিত, এবং গাজার আকাশে এখনও ধোঁয়ার ছায়া।